শবে বরাত কি – শবে বরাত নিয়ে ভ্রান্ত ধারণা

শবে বরাত কি

শবে বরাত কি

হাদিসের ভাষায় শবে বরাত হলো মধ্য শাবান এর রাত। মূলত মধ্য শাবানের রাত ই শবে বরাত নামে পরিচিত।

মধ্য শাবানের রাত বা শবে বরাতে নামাজের নিয়ম কি? এর জন্য কি আলাদা কোনো ইবাদত রয়েছে?

লাইলাতুল কদর ছাড়া অন্য যে সকল রাতের ফজিলত আছে এর মধ্যে ১০ টি রাতের কথা আল্লাহ তায়ালা শপথ করেছেন।সেই ১০ টি রাত হলো জিলহজ্বের প্রথম দশক।

মধ্য শাবানের রাত বা শবে বরাতে আমরা সবচেয়ে বেশি ইবাদতের দেষ্টা করি।কিন্তু সবচেয়ে বেশি ইবাদত করা উচিত লাইলাতুল ক্বদরের রাতে
এর পাশাপাশি যদি কেউ মধ্য শাবানের রাতে আল্লাহ তায়ালার ক্ষমা লাভের আশায় ইবাদত করে সেটা দোষনীয় হবে না।সেটা জায়েজ।

এ রাতে এতোটুকু ফজিলত অবশ্যই প্রমানিত যে,আল্লাহ রাব্বুল আলামিন এ রাতে হিংসুক ছাড়া, মুসরিক ছাড়া বাকি মানুষ গুলোকে সাধারন ক্ষমা ঘোষনা করেন।
অতএব এ রাতে কোনো ফজিলত নেই ব্যাপারটা সেরকম নয়।

বিভিন্ন হাদিসের আলোকে এটুকু অন্তত সাব্যস্ত হয় যে আল্লাহ তায়ালা হিংসুক, মুসরিক ছাড়া বাকি মানুষগুলো কে সাধারণ ক্ষমা ঘোষনা করেন।

মধ্য শাবানের রাত বা যাকে শবে বরাত বলি এ রাতের মূল আমল হলো নিজেকে শিরক এবং হিংসা থেকে পরিচ্ছন্ন রাখা।সাধারণ ক্ষমার উপযুক্ত করা।এটা হলো মূল আমল।এর বাইরে আপনি ক্ষমা লাভের জন্য যদি চেষ্টা করেন সেটা কোনো দোষনীয় বিষয় নয়।তবে এ রাতকে কেন্দ্র করে বিশেষ ফরমেটে নামাজ রাত জেগে বিশেষ ফরমেটে ইবাদত,এতো রাকাত নামাজ বা এই সুরা এতো বার এরকম কোনো কথা কুরআন হাদিসে বর্নীত নেই।

আমরা জানি যে এরকম কোনো ফরমেট যেটা কুরআন হাদিসে নেই নবী-রাসুলগন পালন করেন নি। এরকম কোনো নিয়ম নিজেরা বানিয়ে সেটা সুন্নত হিসেবে বা শরিয়া সিদ্ধ আমল মনে করে সেই অনুযায়ী আমল করলে সেটা বিদআত হিসেবে গন্য হবে।

শবে বরাত নিয়ে মানুষের কিছু ভুল ধারনা

অনেকে মনে করে এই রাতে ভাগ্য নির্ধারন করা হয়।
কুরআনুল কারীমে আছে লাইলাতুল ক্বদরে ভাগ্য নির্ধারন করা হয়।যদিও এটা নিয়ে ওলামা-একরামদের একাধিক মত রয়েছে। কিন্তু অধিকতর গ্রহনযোগ্য এবং সরাসরি কুরআনুল কারীমের আয়াতের অর্থের দিকে তাকালে বুঝা যায় আল্লাহ তায়ালা যে রাতে কুরআন নাযিল করেছিলেন ওই রাতেই ভাগ্য নির্ধারন করেন।

অতএব বাড়াবাড়ি আমাদেরকে পরিহার করতে হবে। মধ্য শাবানের রজনীতে আমরা আল্লাহ তায়ালার কাছে ক্ষমার উপযুক্ত হওয়ার জন্য হিংসা ও শিরক ছেড়ে নিজেদেরকে মুক্ত হওয়ার চেষ্টা করবো।
ক্ষমা পাওয়ার জন্য প্রচেষ্টা আমাদের থাকবে।কিন্তু বিদআতি পন্থায় বিশেষ ফরমেট ঠিক করে ইবাদত করবো না।

অনেকে এই দিন হালুয়া রুটি খায়।হালুয়া রুটি খায় কারন তারা মনে করে নবী (সা:) এর দন্ত মুবারক উহুদের যুদ্ধে শহীদ হয়েছিলো। সেই কারনে নবী শক্ত খানা খেতে পারতেন না।হালুয়া খেতেন।এই জন্য অনেকে হালুয়া খায়।নবী (সা:)-এর দন্ত মুবারক শহীদ হয়েছিলো অন্য মাসে।শাবান মাসে নয়। এরপরে নবীর দন্ত মুবারক শহীদ হয়েছিলো মুশরিকদের আঘাতে।এর জন্য তিনি হালুয়া খেয়েছিলেন।

যদিও এই কথার ভিত্তি নেই।সেই ঘটনার ওপরে ভিত্তি করে নবী (সা:)-এর ওপরে সহমর্মিতা প্রকাশ করে হালুয়া খাওয়ার প্রথা পালন করা বোকামি ছাড়া আর কিছুই নয়।

আল্লাহ আমাদের সবাইকে কুরআন সুন্নাহের আলোকে ইবাদত করার তাওফিক দান করুক।
আমীন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *