বিয়ে করতে কি কি লাগে – বিয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। বিয়ের মাধ্যমে শুধু দুটো মানুষের মিলন কেই বোঝায় না বরং দুটো পরিবার এর সামাজিক মিলবন্ধন কেও শক্ত করে তোলে। বিয়ে যে অবশ্যই একটি ভালো বিষয়। তবে বিয়ে করার ক্ষেত্রে আপনাকে কিছু নিয়ম মেনেই সকল কার্য সম্পাদনা করতে হবে।
প্রিয় পাঠক-পাঠিকা গন। আমাদের আজকের আর্টিকেলে আমরা জানাবো বিবাহ এর সকল নিয়ম সম্পর্কে। বিয়ে করতে কি কি লাগে ইত্যাদি সব কিছু থাকবে আমাদের পোষ্টে। আপনারা যারা সামনে বিয়ে করতে চাচ্ছেন তাদের জন্য আর্টিকেল টি অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
বিয়ে করতে কি কি লাগে
বিয়ে করতে অবশ্যই ছেলের বয়স ২১ বছর ও মেয়ের বয়স ১৮ বছর হতে হবে। এর কম বয়সে বিবাহ করা আইনগত অপরাধ ও বাল্যবিবাহ। বিয়েতে কম পক্ষে ৩ জন সাক্ষীর প্রয়োজন হবে। এ ক্ষেত্রে পুরুষ সাক্ষীর সংখ্যা মহিলা সাক্ষীর চেয়ে বেশি হতে হবে। ছেলে ও মেয়ের নিজ নিজ জন্মনিবন্ধন কার্ড, জাতীয় পরিচয় পত্র ও দুই কপি করে পাসপোর্ট সাইজের ছবি লাগবে।
আরো পড়ুন-
ডিজিটাল মার্কেটিং কি – ডিজিটাল মার্কেটিং কিভাবে করে বিস্তারিত
বিয়েতে সাধারণত সাক্ষি, কাজি, পরিবার ইত্যাদি প্রয়োজন হয়। তবে অনেকেই আছেন যারা পরিবার ছাড়াই বিয়ে করতে চাচ্ছেন তাদের জন্য নিচে আমরা বিস্তারিত লিখে দিচ্ছি বিয়ে করতে কি কি লাগে –
রেজিস্ট্রি ম্যারেজ করতে কি কি লাগে
রেজিস্ট্রি ম্যারেজ সাধারণত কাজির মাধ্যমে করতে হবে। এ ক্ষেত্রে ছেলে ও মেয়ের সই দেয়ার মাধ্যমে বিবাহ রেজিষ্ট্রেশন হয়ে যায়। তবে রেজিস্ট্রি ম্যারেজে অবশ্যই কম পক্ষে দুজন পুরুষ সাক্ষী প্রয়োজন হয়। সাক্ষীর ক্ষেত্রে দুজন পুরুষ অথবা ১ জন পুরুষ একজন মহিলা। দুজন এই মহিলা হলে হবে না। কিছু ক্ষেত্রে পরিবার এর কর্তা কেও প্রয়োজন হতে পারে।
যারা কোর্ট ম্যারেজ করেন তারা যদি ইসলামি আইন অনুযায়ী বিবাহ সম্পন্ন করতে চান তাহলে কোর্ট ম্যারেজ এর পাশাপাশি একজন কাজী ডেকে দুজন সাক্ষী নিয়ে বিবাহ রেজিস্টার করে ফেলতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে বৈধতা নিয়ে জটিলটা খুব বেশি হবে না।
কোর্ট ম্যারেজ করতে কি লাগে
অনেকেই জানতে চান যে কোর্ট ম্যারেজ করতে কি কি লাগে। এখানে একটি দুইশত টাকার হলফ নামায় ছেলে ও মেয়ে কে স্বামি-স্ত্রি হিসেবে ঘোষনা করা হয়। যদি কোর্টম্যারেজ করতে চান তাহলে ছেলে ও মেয়ের অবশ্যই দুই কপি করে পাসপোর্ট সাইজের ছবি নিতে হবে।

যে কোনো উকিল এর মাধ্যমে যে কোনো স্থানে কোর্ট ম্যারেজ বিবাহ সম্পন্ন করা যায়। এর পরে কাজি ডেকে সেটার রেজিস্ট্রি করে নিতে হবে। কাজির কাছে যাওয়ার পূর্বে অবশ্যই জাতীয় পরিচয় পত্র, জন্মনিবন্ধন ও ছেলে- মেয়ের ছবি নিতে হবে।
আরো পড়ুন-
কোর্ট ম্যারেজ করতে কত টাকা লাগে?
কোর্ট ম্যারেজ এর ফি ২০০৯ সালের ২১ বিধি অনুযায়ী – কাবিন নামা যদি ৪ লক্ষ টাকা হয় তাহলে প্রতি হাজারে ফি হবে ১২.৫০ টাকা হারে। প্রতি ১ লাখে ফি হবে ১২৫০ টাকা। এর পরে অধিক লাখ টাকা কম টাকার ক্ষেত্রে ফি হবে ১০০ টাকা করে।
উকিল ফি, স্টাম্প ফি, প্রথম শ্রেণির মেজিস্ট্রেট ফি যাবতীয় মিলিয়ে ৩ হাজার টাকা। তবে এটা অনেক সময়ে কম বা বেশি হতে পারে। এর পরে কাজি এনে রেজিস্টার করানো হলে কাজি অতিরিক্ত ফি দাবি করতে পারে। এসব মিলিয়ে হিসাব করে টাকা নিয়ে কোর্ট ম্যারেজ করতে যেতে হবে।
তথ্যসূত্রঃ ডেইলি ইনকিলাব
কাজী অফিসে বিয়ের খরচ 2022
কাজী অফিসে বিয়ের খরচ নির্ধারণ করা হয় বিয়ের দেনমোহর বা কাবিন নামার উপর ভিত্তি করে। মুসলিম বিবাহ আইন অনুযায়ী কাবিন নামা অনুযায়ী প্রতি হাজারে ১০ টাকা করে রেজিষ্ট্রেশন ফি দিতে হবে। রেজিষ্ট্রেশন ফি ১০০ টাকার কম হবে না ও ৪০০০ টাকার বেশি হতে পারবেনা।
আরো পড়ুন-
ধরুন, আপনার কাবিন নামা যদি হয় ২০ হাজার টাকা তাহলে ফি দিতে হবে ২০০ টাকা। ১০০ টাকার নিচে ফি দিতে পারবেন না। যদি দেনমোহর ২ হাজার টাকা হয় তাহলেও সর্বনীম্ন ফি ১০০ টাকা দিতে হবে।
পালিয়ে বিয়ে করতে কি কি লাগে
পালিয়ে বিয়ে করলে আপনাকে কোর্ট ম্যারেজ এর মাধ্যমে বিবাহ করতে হবে। সেখানে অবশ্যই দুজন সাক্ষী ও কাবিন নামা অনুযায়ী ফ্রি ও উকিল স্টাম্প ফি ইত্যাদি নিয়ে যেতে হবে। ছেলে ও মেয়ে উভয়ের জাতীয় পরিচয় পত্র/ জন্মনিবন্ধন/ এসএসসি সনদ, ছেলে ও মেয়ের দুই কপি করে ছবি।
কোর্ট ম্যারেজ করতে কত বয়স লাগে
কোর্ট ম্যারেজ করতে হলে বয়স কত লাগে এটা অনেকেই জানতে চান। কোর্ট ম্যারেজে ছেলের বয়স ২১ হতে হবে ও মেয়ের বয়স ১৮ হতে হবে। এর কম যদি হয় তাহলে কন্ডিশনাল বিবাহ করা যাবে। বিবাহ পরবর্তী সময়ে তারা একত্রে থাকতে পারবে না। সম্পুর্ণ ভাবে বয়স হলেই কেবল এক সাথে থাকতে পারবে।
আরো পড়ুন-
গেম খেলে টাকা আয় – Bitcoin Pop দিয়ে মোবাইল দিয়ে আয় করুন সহজেই – 2022
কোর্ট ম্যারেজ সার্টিফিকেট কিভাবে পাবেন
আপনি যদি কোর্ট ম্যারেজ করেন তাহলে বিবাহ সনদ আপনার উকিল এর মাধ্যমে সংগ্রহ করতে হবে। আপনি যে উকিলের মাধ্যমে আপনার ম্যারেজ সম্পন্ন করেছেন তার কাছ থেকে ম্যারেজ সার্টিফিকেট নিতে হবে। যে রেজিস্ট্রি অফিসের মাধ্যমে করবেন সেখানেই পাবেন।

কম খরচে বিয়ে কিভাবে করবেন
কম খরচে বিয়ে করা জন্য দেনমোহর এর পরিমান কম হতে হবে। দেনমোহর যত কম ফি ও তত কম। বিশেষ করে যদি কাজী অফিসে বিবাহ সম্পন্ন করেন তাহলে কোর্ট ম্যারেজের তুলনায় ফি অনেক টা কম হবে।
আরো পড়ুন-
বাচ্চাদের জন্য কোন পাউডার ভালো – সেরা ১০ টি পাউডার এর তালিকা 2022
অনলাইনে বিবাহ রেজিস্ট্রেশন যাচাই করার নিয়ম – নিকাহ রেজিস্ট্রার করার নিয়ম
বিয়েতে কতজন সাক্ষী লাগে
বিয়েতে কম পক্ষে ৩ জন সাক্ষী প্রয়োজন। তন্মধ্যে দুজন পুরুষ ও একজন মহিলা হতে হবে। দুজন মহিলা একজন পুরুষ হলে হবে। যদি ৩ জন না পাওয়া যায় তবে ১ জন পুরুষ ১ জন মহিলা সাক্ষী রাখা যাবে। সাক্ষীদের ক্ষেত্রে তাদের পূর্ন পরিচয় উল্লেখ করতে হবে। তাদের আইডি কার্ড, ছবি প্রয়োজন হতে পারে।
কোর্ট ম্যারেজ বিস্তারিত ভিডিও
আমাদের শেষ কথা
বিয়ে করতে কি কি লাগে – আর্টিকেলে আমরা জানালাম কিভাবে আপনারা সহজেই বিয়ে করতে পারেন৷ বিয়ে করার জন্য যে সকল বিষয় গুলো জানা প্রয়োজন সব কিছুই তুলে ধরলাম। চলছে বিগের মৌশুম শিতকাল। করে ফেলুন বিয়ের মত ফরজ কাজটি আপনিও।