ঈমান ভঙ্গের কারণ – ঈমান হচ্ছে ইসলামের মূল ভিত্তি। যার ঈমান ঠিক থাকবে না তার কোন আমল কবুল হবে না। যেমন, আমরা নামাজের আগে বা পবিত্রতা অর্জন করার জন্য অজু করে থাকি এবং এই অজু করার পরে কিছু কাজ করলে অজু চলে যায় তেমন ঈমান আনায়নের পরে আমাদের এমন কিছু কাজ আছে যেগুলো করলে আমাদের ঈমান
আর যার ঈমান ঠিক না থাকবে তার আমল কবুল হবে না। এমন কি সে যদি ঐ অবস্থায় মৃত্যু বরন করে তাহলে সে জাহান্নামি হয়ে যাবে। তাই আমাদের এ বিষয় টি খুব গুরুত্ব দেওয়া উচিত। আমরা এমন কাজ এখন করে থাকি যে আমরাও জানি না আমরা ঈমান হারা হয়ে গেছি, বা আমাদের ঈমান নষ্ট হয়ে গেছে। তাই আমাদের এই বিষয় গুলো খুব সতর্ক থাকা উচিত।
আজকে আমরা আলোচনা করবো ঈমান ভঙ্গের কারণ গুলো নিয়ে। ঈমান শব্দের অর্থ কি? কি কি কাজ করলে ঈমান ভঙ্গ হয় এবং ঈমানের শাখা প্রশাখা কতটি ও নবী করিম সঃ ঈমান সম্পর্কে কি বলেছেন এগুলো সম্পর্কে আলোচনা করবো ইনশাআল্লাহ।
ঈমানের শাখা প্রশাখা কতটি যেসব বিষয়ের প্রতি ঈমান আনা আবশ্যক ঈমানের সত্তরটিরও বেশি শাখা প্রশাখা রয়েছে। তার মধ্যে প্রধান ৭ টি বিষয়ের উপর পূর্ণ বিশ্বাস স্থাপন করা ফরজ। এগুলো হলো –
- আল্লাহ সাথে কাউকে শরিক করা
- ফেরেশতাদের প্রতি বিশ্বাস করা
- আসমানী কিতাব সমূহ উপর বিশ্বাস করা
- নবী-রাসূলগণের প্রতি ঈমান আনা
- আখেরাতের প্রতি বিশ্বাস করা
- তাকদীরের ভালো মন্দর উপর আস্তা রাখা
- মৃত্যুর পর পুনরুত্থান বা কিয়ামতের দিনের উপর বিস্বাশ করা
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন,“ঈমানের সত্তরের অধিক শাখা-প্রশাখা রয়েছে, তার মধ্যে সর্বোত্তম হচ্ছে ,”আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই”একথার সাক্ষ্য দেওয়া এবং সর্বনিম্ন শাখা হলো কষ্ট দায়ক জিনিস রাস্তা থেকে সরিয়ে ফেলা। আর লজ্জা ঈমানের গুরুত্বপূর্ণ শাখা।” (বুখারী ও মুসলিম)
আরো পড়ুন- ঈমান কত প্রকার ও কি কি এবং ইহার অর্থ কি?
ঈমান ভঙ্গের কারণ
ঈমান ভঙ্গের কারণ রয়েছে অনেক এর ভিতরে আমরা বর্তমান সময়ে যে জিনিস গুলো বেশি বেশি করে ঈমান হারা হই এসব বিষয় গুলো তুলে ধরার চেষ্টা করবো।
আল্লাহর সাথে শিরিক করা– আমরা মুসলমান আমাদের ঈমান থাকতে হবে উত্তম। কিন্তু যে মুসলমান আল্লাহর সাথে শরিক করে বা আল্লাহর সাথে কাউকে তুলনা করে আল্লাহ তাকে কোন দিও ক্ষমা করবেন না, কুরআনের মধ্যে আল্লাহ বলেন,
নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর সঙ্গে অংশীদার করা ক্ষমা করেন না। তা ব্যতীত অন্যান্য অপরাধ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন; এবং যে কেউ আল্লাহর সঙ্গে শিরক করে সে এক মহাপাপ করে।’ [সুরা নিসা ৪ : ৪৮]
কেউ আল্লাহর সঙ্গে শিরক করলে অবশ্যই আল্লাহ তার জন্য জান্নাত হারাম করবেন এবং তার আবাস জাহান্নাম। আর জালিমদের জন্য কোনো সাহায্যকারী নেই।’ [সুরা মায়িদা, ৫ : ৭২]
আরো পড়ুন- সহীহ হাদিস কাকে বলে – হাদিস সহিহ হওয়ার 5 টি শর্ত?
নবী করিম সঃ এর কথা বা এর ফয়সালার উপর দিয়ে অন্য কারোর কথা মেনে নেওয়া।, যেমন, আছ কালকার জামানায় দেখা যায় যে অনেক বন্ড বের হয়েছে যারা বলে যে কুরআনের মধ্যে সব রয়েছে হাদিসের কোন প্রয়োজন নেই হাদিসের প্রতি বিশ্বাস করে না তবে এটা সত্যি কুরআনের মধ্যে সব কিছু রয়েছে কিন্তু হাদিসে কথাও আল্লাহ নিযেই মেনে চলতে বলেছেন, কুরআনের মধ্যে আল্লাহ বলেন,
আপনি কি তাদের দেখেননি, যারা দাবি করে যে, যা আপনার প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে এবং আপনার পূর্বে যা অবর্তীণ হয়েছে, আমরা তার ওপর ঈমান এনেছি। তারা বিচার-ফয়সালা নিয়ে যেতে চায় তাগুতের কাছে, অথচ তাদের প্রতি নির্দেশ হয়েছে, যাতে তারা তাকে মান্য না করে। পক্ষান্তরে শয়তান তাদের প্রতারিত করে পথভ্রষ্ট করে ফেলতে চায়।’ [সুরা নিসা, ৪ : ৬০]
আরো পড়ুন- আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়ার দোয়া
জাদু টোনার উপর বিস্বাস করা বা ভবিষ্যৎ বলতে পারে এমন লোকের কথা বিশ্বাস করাঃ আমরা ২০২২ সালে এসেও এই সব মিথ্যা জিনিসের উপর বিশ্বাস করি যা আমাদের বোকামি ছাড়া কিছুই না এটা একটা বরো ধরনের দোকা যা আমাদের চোখের আডালে রেখেছে শয়তান। এগুলোর উপর বিস্বাস করলেও আমাদের ঈমান থাকবে না।আল্লাহ তায়ালা কুরআন বলেন,
সুলাইমান কুফরি করেনি, কুফরি তো করেছিল শয়তানরাই। তারা মানুষকে জাদু শিক্ষা দিত…।’ [সুরা বাকারা, ২ : ১০২]
শেষ কথা
ঈমান ভঙ্গের কারণ – আমাদের অবশ্যই সচেতন হওয়া উচিত আমাদের ঈমান ঠিক রাখার জন্য। আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন আমাদের সকল মুসলমানদের এসব পাপাচরণ থেকে মুক্ত থাকার তাওফিক দান করুন এবং ঈমান নিয়ে যাতে সকলে মৃত্যু বরন করতে পারি সেরকম আমল করা করার তাওফিক দান করুন আমিন।
আরো পড়ুন- ডিপ্রেশন থেকে মুক্তির উপায় – মানুষিক অবসাদ থেকে মুক্তির উপায় 2022