আশুরার ইতিহাস
আশুরার ইতিহাস
মহাররমের ১০ তারিখকেই মুলত আশুরা বলা হয়। আমাদের রসূল(সাঃ) যখন মদিনায় হিজরত করছিলেন, হিজরত করার পরে আল্লাহর নবী (সাঃ) দেখতে পেলেন ইহুদি রা সেখানে রোজা রাখে মহাররমের ১০ তারিখে। তখন নাবী (সাঃ) তাদেরকে জিজ্ঞেস করলেন “তোমরা আশুরার এই দিনে কেনো রোজা রাখো”?
উত্তরে তারা বললো ” এই দিনে আমাদের জাতি, আমাদের কওম ইজ্রাইলীদেরকে অর্থাৎ মূসা (আঃ) এর সঙ্গে ফেরাঊনের যে সংঘর্ষ হয়েছিলো,যুদ্ধ হয়েছিল,
আল্লাহ রাব্বুল আলামিন যে, ফেরাঊনকে সাগরে ডুবিয়ে মেরেছিলেন।আজকের এই দিনটি ছিলো সেই দিন”।
সহীহ হাদিস কাকে বলে – হাদিস সহিহ হওয়ার 5 টি শর্ত?
অর্থাৎ মূসা (আঃ) এর কওমকে সাগরের বুক চিরে রাস্তা নির্মান করে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন নিরাপদ স্থানে আশ্রয় দিয়েছিলেন। এবং ফেরিঊন যখন তার দল বল সহো নবী মূসা (আঃ) কে হত্যা করার জন্য তার পিছনে ছুটছিল তখন আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ফেরাঊনকে তার দল বল সহো সাগরের পানিতে ডুবিয়ে,পানিতে নিমজ্জিত করে মেরে ফেলেছিলেন।
এবং কালের আবর্তনে আজ অব্দি মহান আল্লাহ ফেরাঊনের মৃত দেহকে সংরক্ষন করে রেখেছেন জালিম সম্প্রদায়ের জন্য নিদর্শন হিসেবে। যাতে তারা বুঝতে পারে, যারা জালেম,আল্লাহর অবাধ্য, যারা বিসৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চায় এই পৃথিবীর বুকে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাদেরকে সাময়িক ভাবে ছার দিলেও একেবারে ছেড়ে দেন না।
নির্দিষ্ট সময়ে তাদেরকে পাকড়াও করেন এবং এভাবেই শাস্তি দেন। তো ইহুদীরা বল্লো এই কারনেই আমরা আজকের দিনে রোজা রাখি।
তখন রাসূল (সাঃ) বললেন ” তোমরা যেহেতু রোজা রাখো মূসা (আঃ) তো তোমাদের থাকেও আমার আরও নিকটের। তার কওম আমার আরও নিকটের। আমাদের রোজা রাখা তো আরও বেশি জরুরি। আল্লাহর রাসূল(সাঃ) তখন থেকে রোজা রাখা শুরু করলেন।
এবং সাহাবিদেরকেও রোজা রাখার জন্য বললেন। এবং বিশ্বনবী (সাঃ) এ ও বললেন যে,এই আশুরার রোজা যে রাখবে, আশুরার আগে একদিন ও পরে একদিন, এই দুটি রোজা যারা রাখবে, মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তার পেছনের সমস্ত ছোট খাটো গুনাহ গুলো মাফ করে দিবেন। সুবহানআল্লাহ!
সূতরাং আশুরার দিনের রোজা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আশুরার দিনের গুরুত্ব ফজিলত অনেক বেশি।
এবং এই আশুরার রোজা আমরা যারা রাখি আল্লাহর রাসূল যে হাদিসটি বলেছেন আমাদেরকে খেয়াল রাখতে হবে।
পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার ইসলামিক উপায় – কীভাবে মনোযোগী হবেন? 2022
ইহুদিরা যেহেতু একটি রোজা রাখতো,সুতরাং আমরা কেউ যেনো একটি রোজা না রাখি।
রাসূল (সাঃ) তাদের থেকে আমাদের পৃথক করার জন্য দুটি রোজা রাখতে বলেছেন। ১০ ই মহাররম মাস্ট আপনাকে রোজা রাখতে হবে। আরেকটা রোজা আপনি ৯ ই মহাররম বা ১১ ই মহাররম যে কোনো একদিন আপনার ইচ্ছে অনুযায়ী রাখতে পারবেন।
তবে হাদিসের বর্ননা অনুয়ায়ী নবী (সাঃ) ৯ এবং ১০ এই দুইদিন রোজা রাখার ইচ্ছে পোষন করেছিলেন।তাই আলেম ওলামাগন এই দুইদিনকে রোজা রাখার জন্য শ্রেষ্ঠ দিন হিসেবে গন্য করেছেন।
আশুরাকে কারবালা কেনো বলা হয়
আশুরার দিনে নবী মূসা (আঃ) এর বিজয় ও ফেরাউনের পরাজয়ের দিন হলেও ঘটনাচক্রে এই আশুরার দিনেই একটি মর্মান্তিক ঘটনা ও ঘটে। আমাদের হুসাইন (রাঃ) আনহু কে কারবালায় এই দিনেই নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল।
আশুরার দিনে কি শোক পালন করা উচিৎ
আশুরার দিনে আমাদের হুসাইন (রাঃ) আনহুকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল। তাই আমরা রোজা রাখার পাশাপাশি হুসাইন (আঃ) এর জন্য দোয়া করতে পারি,তাঁকে যারা হত্যা করেছে তাদের শাস্তির জন্য দোয়া করতে পারি। তবে এই দিন উপলক্ষে অতিরিক্ত শোক পালন করা ইসলামে জায়েজ হবে না।
বিপদের দোয়া – অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে বিপদে পড়লে কোন দোয়া পড়া উচিৎ? 2022
অনেকেই মনে করেন এই দিন শোকের দিন তাই রোজা রেখে মূসা (আঃ) এর বিজয়ের আনন্দ উপলক্ষে রোজা রাখা যাবে না। কিন্তু সেটা অনুচিত হবে। কারন মূসা (আঃ) এর জন্য রোজা রাখতে বলেছেন আমাদের রাসূল (সাঃ)। তার আদর্শ আমাদের অবশ্যই পালন করতে হবে।
আশুরার নামাজ
আশুরার দিনের সর্বোচ্চ উত্তম ইবাদাত হলো আশুরার রোজা। এর পরে ইবাদত হিসেবে আপনি দোয়া,ইস্তেগফার পড়তে পারেন। কিন্তু আশুরার জন্য আলাদা ভাবে কোনো নামাজ নেই। আপনি ইচ্ছে করলে নফল নামাজ পড়তে পারেন। নফল নামাজের নিয়তে। আশুরার জন্য আলাদাভাবে কোনো নিয়ত করে নামাজ পড়বেন এমন কোনো আলাদা নামাজ এই দিনের জন্য নেই।